২৫শে জানুয়ারি, ২০২১ ইং | ১২ই মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: 2:33 AM, December 15, 2017
ম্যান-পাওয়ার ব্যবসা নিয়ে বাংলাদেশে সন্দেহের শেষ নেই। আদম ব্যাপারীদের দিকে বাঁকা চোখে তাকানোর লোকও সমাজে কম নেই। অথচ এই জনসংখ্যা রফতানি খাতই বাংলাদেশের বিকাশমান অর্থনীতিতে অসামান্য ভূমিকা পালন করে। অর্থনীতির পাশাপাশি জনসংখ্যা সমস্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করার ক্ষেত্রেও জনসংখ্যা রফতানির অভাবনীয় অবদান রয়েছে। বহু বেকার এভাবেই দেশের বাইরে গিয়ে পয়সার মুখ দেখছে। দেশে জনসংখ্যার চাপ কমে কিছু আয়-রোজগারের পথও খুলছে এ সেক্টরের মাধ্যমে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতার ক্ষেত্রে রেমিটেন্স গুরুত্বপূর্ণ নিউক্লিয়াস হিসাবে কাজ করে, যা এ খাতের অর্জন। রেমিটেন্সে মোট অভ্যন্তরীণ আয় বা জিডিপির ৩০ ভাগ। জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি এই রেমিটেন্স, এ তথ্য প্রায় সকলেরই জানা।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ রেমিটেন্স অর্জনকারী দেশ। বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ বাংলাদেশি কর্মোপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। এরা যদি বিদেশে কর্মসংস্থান না করতে পারতো তাহলে দেশের বেকার সমস্যা আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতো। দেশের আর্থিক গতিশীলতা অর্জিত হতো না।
এক সময় বাংলাদেশ বিশ্ব শ্রমবাজারে একচেটিয়াভাবে দাপট দেখালেও এখন বেশ কিছু প্রতিযোগিতা সামলাতে হচ্ছে। কারণ, বিশ্ব শ্রমবাজারে আমাদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে ভারত, চীন, নেপাল, ফিলিপাইন এবং শ্রীলংকা। এ ছাড়া বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানি সামান্য কয়েকটি দেশকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক জনশক্তি রফতানি করা হয়ে থাকে। প্রথাগতভাবেই বাংলাদেশের শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্য নির্ভর, যা এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশেও সম্প্রসারিত করার তীব্র প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
অতীতের কয়েক বছরের পরিসংখ্যানে জানা যায়, মোট রফতানিকৃত জনশক্তির ৪৮ শতাংশই পাঠানো হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এ ছাড়া সৌদি আরবে ১৫ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ১৫ শতাংশ, ওমানে ৬ শতাংশ এবং সিঙ্গাপুরে ৬ শতাংশ জনশক্তি রফতানি করা হয়। অবশিষ্ট জনশক্তি রফতানি করা হয় অন্যান্য দেশে।